Home »
রান্না-বান্না
» রমজানে তেতো করল্লার স্বাদ
রমজানে তেতো করল্লার স্বাদ
Written By Jibon Islam on Saturday, August 6, 2016 | 1:03 PM
করল্লা সবজি হিসেবে অসাধারণ। তেতো স্বাদের এই সবজি সঠিকভাবে রাঁধতে পারলে অন্য যে কোনো সবজির তুলনায় খেতে দারুণ স্বাদের হয়। শুধু স্বাদেই অনন্য নয় এই সবজি, আছে নানা গুণও। করল্লার যে কোন পদ আমাদের দেহের জন্য খুব উপকারী। বিশেষ করে এই পবিত্র রমজান মাসে যখন আমাদের নিয়মিত ডায়েটের যখন বদল ঘটে, তখন শারীরিক শক্তি ধরে রাখতে এবং রোজা রেখে সুস্থ থাকতে সাহায্য করতে পারে করল্লা।
উপকারিতাঃ
তিতকুটে স্বাদের সবজি করল্লায় আছে প্রচুর পরিমানে আয়রন যা আমাদের দেহে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করতে পারে। সেই সাথে আছে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম যা যথাক্রমে এক আঁটি পালংশাক ও একটি কলার দিগুন। এসব উপাদান আমাদের হাড় ও দাঁত ভাল রাখতে সাহায্য করে। সেই সাথে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে এবং হৃৎপিণ্ডের সুস্থতাও নিশ্চিত করে। আরও আছে বিটা ক্যারোটিন যা দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে এবং চোখের নানা সমস্যার সমাধান করে। এখানেই শেষ নয়। একটি করল্লাতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যা ত্বক ও চুলের সুরক্ষা করে। সেই সাথে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতাও তৈরিতে সাহায্য করে। এছাড়াও আছে ম্যাগনেসিয়াম, ফলিক এসিড, জিঙ্ক, ফসফরাস জাতীয় নানা উপাদান ও খনিজ পদার্থ যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। এতে আরও নানা ডায়েটারি ফাইবার যা কিনা আমাদের জন্য খুব জরুরী। কারন এই ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে যা আমাদের জন্য খুবই উপকারী, বিশেষ করে এই রোজার মাসে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের যে সমস্যা দেখা দেয় তা দূর করতে সাহায্য করতে পারে করল্লা।
এছাড়াও ডায়াবেটিসের রোগী যারা নিয়মিত রোজা রাখছেন তারা রোজার মাসে খেতে পারেন করল্লা দ্বারা তৈরি নানা খাবার। কারন এই সবজি পলিপেপটাইড পি ব্লাড ও ইউরিন সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অর্থাৎ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে করল্লা। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করলা বা করলার রস অথবা করলা সিদ্ধ খেতে পারেন এই রোজার মাসে এবং অনায়াসে রোজা রাখতে পারেন কোনো প্রকার দুশ্চিন্তা ছাড়াই।
বহু গুণের এই সবজি এবং এর মজাদার এক রেসিপি নিয়েই করা হয়েছে আমাদের আজকের আয়োজন। আসুন জেনে নেই মজাদার আলু করল্লা ভুনা।
উপকরণঃ
করলা – ১টা বড় সাইজের
আলু – ২টা ছোট সাইজের
পেঁয়াজ বাটা – ৩ টেবিল চামচ
হলুদ গুঁড়া- ১/২ চা চামচ
ধনেগুড়া – ১ চা চামচ চামচ
মরিচ গুড়া – ১/২ চা চামচ
জিরা গুড়া – ১/৩ চা চামচ
লবণ স্বাদমতো
চিনি – ১ চিমটি
তেল – ১/২ কাপ
প্রণালীঃ
১. প্রথমে আলুর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। ছোট ছোট আলু হলে ভালো। গোল গোল করে কেটে নিতে হবে ও ধুয়ে নিতে হবে।
২. এরপরে করলা নিতে হবে তবে করলার খোসা ছাড়াতে হবেনা। আলুর মত করে করলাও পাতলা করে স্লাইস করতে হবে। সবজি কাটা হয়ে গেলে আলাদা করা রাখতে হবে।
৩. এবার একটি পরিষ্কার প্যান না কড়াই নিয়ে তাতে তেল দিয়ে একটু গরম করতে হবে। তেল হালকা গরম হলে তাতে পেঁয়াজ দিয়ে নেড়ে নিয়ে ভাল করে ভাজতে হবে।
৪. পেঁয়াজ বাদামী রঙ ধারণ করলে এবার এতে একে একে হলুদ গুঁড়া, ধনে গুড়া, মরিচ গুড়া ও লবণ দিতে হবে। এরপরে ভাল করে নেড়ে নিয়ে সব মশলা ভেজে ভুনে নিতে হবে।
৫. মশলা ভুনা করা হয়ে গেলে এবার তার মধ্যে একে একে করলা ও আলু দিয়ে দিতে হবে। আলু ও করলা ভালভাবে কয়েকবার নেড়ে মশলার সাথে মিশিয়ে নিয়ে কষাতে হবে। কষানো হয়ে গেলে পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এ সময় চুলার আঁচ কমিয়ে দিতে হবে।
৬. কিছুক্ষন পর ঢাকনা সরিয়ে আবার ভাল করে নেড়ে দিতে হবে। এভাবে একটু পরে পরে দুয়েকবার নেড়ে দিতে হবে। জিরা ছিটিয়ে দমে রেখে তেল ভেসে উঠলে নামিয়ে নিতে হবে। চাইলে চিনি দিতে পারেন, না দিলেও ক্ষতি নেই। চাইলে দিতে পারেন ধনে পাতাও।
স্বাদে ও গুনে ভরপুর মজাদার এই ভাজি আপনার সেহেরীর স্বাদ বাড়িয়ে তুলবে বহুগুণে।
করলার নানা উপকারতো জানা হয়ে গেল। সেই সাথে শেখা হয়ে গেল মজাদার একটি রেসিপিও। এত গুনে গুণান্বিত এই সবজি এবার তাহলে যোগ করে নিন নিজের সেহেরীর পাতে এবং পবিত্র এই মাসে নিজেকে ইবাদত বন্দেগীতে বিলীন রাখুন বিনা রোগ শোকে।
Labels:
রান্না-বান্না
0 comments:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !